নিজস্ব প্রতিবেদঃ খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার গুইমারা উপজেলার জালিয়াপাড়া গুচ্ছগ্রামে বসবাসরত নীরহ গরিবদের কে এলাকা থেকে উচ্ছেদ করার জন্য বিভিন্ন ষড়যন্ত্র মুলক মামলা, হামলা, শাররীক নির্যাতন সহ নানা ভাবে হয়রানি করে আসছে মোঃ সালেহ উদ্দিন, মোঃ ফরিদ মিয়া ও মোঃ হানিফ সহ একটি দুষ্টচক্র। ইতিমধ্যে ফাতেমা বেগম নামের এক মহিলা অভিযোগ করেন যে তার নিজ বাড়িতে মোঃ ফরিদ মিয়া কে ভাড়াটিয়া রাখেন কিন্তু পরবর্তিতে উক্ত ভাড়াটিয়া ফাতেমা বেগমের বাসা অবৈধ দখল করে। এই বিষয়ে ফাতেমা বেগম প্রতিবাদ করলে ছালেহ উদ্দিনের মদদে তাকে বেধরক মারধর করে ভাড়াটিয়া ফরিদুল মিয়া এর স্ত্রী হাসিনা বেগন।
গত জুন ২০২০ সালে ফরিদ মিয়া ফাতেমা বেগমের নিকট হতে একটি কক্ষ ভাড়া নেয় এবং পাঁচ মাস ভাড়া দেওয়ার পর থেকে আর ভাড়া না দিলে গত ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২০ তার কাছে ভাড়া চাইতে গেলে ভাড়া না দিয়ে তর্কে জড়িয়ে পড়ে। একপর্যায়ে মোঃ হানিফ মিয়া এসে ফাতেমা বেগম কে কিল ঘুষি ও লাঠি দিয়ে মারধর করে মারাত্নক জখম করে। এ বিষয়ে ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২০ তারিখে গুইমারা থানায় সাধারন ডায়েরী করা হয় , ডায়েরী নং-৯২৩।
পরবর্তিতে মোঃ সালেহ উদ্দিনের নির্দেশে মোঃ ফরিদ মিয়া ও মোঃ হানিফ ফাতেমা বেগমের সৃজনকৃত গাছ-গাছালি কেটে ফেলে যার ও কোন বিচার হয়নি। এবং এই চক্রটি মিথ্যা মামলা দিয়েও হয়রানি করছে। এসকল হয়রানি ও অত্যাচার হতে পরিত্রাণ চেয়ে এবং জোর দখল করা তার একমাত্র বসত বাড়িটি ফিরে পেতে প্রশাসনের নিকট সহযোগিতা কামনা করেন ফাতেমা বেগম ।
এদিকে সালেহ উদ্দিন এর বিরুদ্ধে ফাতেমা বেগম সহ আরো অনেকের অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে সুবেদার নুরুল ইসলামের ওয়ারিশের থেকে জায়গা ক্রয় করেছেন বলে জানান। এবং ক্রয়কৃত জায়গায় ফাতেমা বেগম, সুফিয়া বেগম, স্বামীঃ মোঃ হানিফ, নূর খাতুন স্বামীঃ জবেদ আলী, কহিনুর বেগম, স্বামীঃ জাকির হোসেন,আজগর আলী, জালাল, বেলাল, সিদ্দিক ও শহিদুলের মা হাওয়া বিবি সহ প্রায় ৮ পরিবার দখলে রয়েছে বলে দাবী করেন।
গুচ্ছগ্রাম বাসীদের দাবী সরকার জালিয়াপাড়া গুচ্ছগ্রামে ১৯৮৬ সনের পাহাড়ি বাঙালির দাঙ্গার পর বড়ইতলি সহ ঝুকিপুর্ন এলাকা থেকে বিভিন্ন পরিবারকে গুচ্ছগ্রামে নিয়ে আসেন। তখন এসকল পরিবারের নিরাপত্তার জন্য সেখানে পুলিশ ক্যা¤প স্থাপন করা হয়। তখন সুবেদার নুরুল ইসলাম ঐ ক্যা¤েপ চাকুরি করতেন। তৎকালীন জায়গার মালিকানা যাচায় বাছায় অনুযায়ী ক্যা¤প এবং গুচ্ছগ্রামের পুরো জায়গাটাই সরকারী খাস জায়গা।
এখন সুযোগ বুঝে সালেহ উদ্দিন জমি দখলের জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে। ইতিপূর্বে রামগড় উপজেলার সার্ভেয়ার জাহাঙ্গীর আলম কে হাত করে খাগড়াছড়ি জেলা ম্যাজিষ্টেড (এডিএম) কোর্টে করা মামলা তদন্তের মাধ্যমে জমির বৈধতা পাওয়ার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
ফরিদের নিকট ফাতেমার বাড়ি দখলের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলে আমরা প্রথমে ভাড়া ছিলাম পরবর্তিতে ফাতেমা বেগম দেশের ২৫ হাজার টাকা মূল্য নির্ধারন করে বাড়ি বিক্রি করেন যার ২০ হাজার টাকা সে নগদ গ্রহন করে এবং আরো ৫ হাজার টাকা বাকী আছে। যার সূত্র ধরে ঝগড়া বিবাদ কালে হাসিনা বেগম ফাতেমা বেগম কে মারধর করে বলে তিনি স্বীকার করেন। কিন্তু বাড়ি বিক্রির ব্যাপারে কোন লিখিত কাগজ বা ক্রয় সংক্রান্ত কোন সাক্ষী দেখাতে পাড়েনি।
বাড়ি বিক্রির ব্যাপারটি ফাতেমা বেগম মিথ্যা বলে জানান এবং বলেন আমাকে উচ্ছেদ করার জন্য ছালেহ উদ্দিন ফরিদকে দিয়ে আমার বাড়ি জোর দখল করে।
গুচ্ছগ্রামের ভুক্তভোগি পরিবারদের দাবী সুবেদার নুরুল ইসলাম যদি উক্ত জমির মালিক হয়ে থাকেন তাহলে তার ওয়ারিসদের এনে জন সম্মুখে তা প্রমান করতে হবে। এবং যারা গুচ্ছগ্রামে বসবাস করে তাদের জানিয়ে জায়গা ক্রয় বিক্রয় করতে হয়। কিন্তু তা না করে ক্রয়ের নামে মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে নীরহদের উচ্ছেদের চেষ্টা চালাচ্ছে।
গুচ্ছগ্রামে বসবাসকারী ওসমান জানান, আমরা যারা গুচ্ছগ্রামে বসবাস করি তাদের সকলকে বাংলাদেশ সরকার এখানে এনেছে। এবং সরকার পুনর্বাসন দিলে এখান থেকে আমরা অন্যত্র চলে যাব। তাই এখানে কেউ জমি ক্রয় বিক্রয় করলে তা আমাদের জানিয়া করা উচিৎ। কিন্তু সালেহ উদ্দিন কিছু বছর পূর্বে এখানে এসেই এখন সে জমির মালিকানা দাবী করছে এবং নীরহ কয়েকটি পরিবার কে নানান ভাবে হয়রানী করছে।
হাফছড়ি ইউ,পি সাবেক মেম্বার এবং গুইমারা উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি আইয়ুব আলী জানান, গুচ্ছগ্রামে কিছু নিরীহ পরিবারকে ক্যা¤েপর টিলা ভুমি ক্রয়ের নামে হয়রানী করছে সালেহ উদ্দিন। যদি সুবেদার নুরুল ইসলাম বা তার ওলী ওয়ারিসের থেকে টিলা ভুমি কিনে থাকে তাহলে প্রমান সহকারে তা উপস্থাপন করলে আসল রহস্য বেড় হয়ে যাবে।
হাফছড়ি ইউ,পি চেয়ারম্যান চাইথোয়াই চৌধুরীর কাছে উক্ত ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, উক্ত বিষয়ে আমি অবগত । গুচ্ছগ্রামে কিছু নিরীহ পরিবার বসবাস করে এবং তাদের সালেহ উদ্দিন নানান ভাবে হয়রানী করছে মর্মে অভিযোগ আছে। এই ব্যাপারে একবার বৈঠকে বসলেও তার সমাধান হয়নি তাই সালেহ উদ্দিন কে পুনরায় ডেকে বিষয়টি মীমাংসা করার চেষ্টা করবো।