শিরোনাম
মঙ্গল. ডিসে ২৪, ২০২৪

পাহারে বেড়ে চলেছে ভূমি জটিলতা, নিরসনের উদ্যোগ নেই

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ  পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়িতে সরকারী নির্দেশ বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে উপজেলা পর্যায়ের কিছু কর্মকর্তাদের উদাসীনতা ও নিজেদের সার্থে পক্ষপাতিত্ব এবং স্থানীয় ভুমি অফিসের সার্ভেয়ার, পুলিশ, ও স্থানীয় এক শ্রেনীর দালাল চক্রদের কারনে বেড়েই চলেছে ভুমি জটিলতা।
জেলার বিভিন্ন উপজেলা, এবং থানা পর্যায়ে চলছে লাগামহীন দুর্নীতি যার ফলে অতিষ্ট সাধারন জনগন। বেড়ে চলেছে জবর দখল এবং সন্ত্রাসী কর্মকান্ড। দুর্নীতির বিরুদ্ধে বাংলাদেশ সরকারের জিরো টলারেন্স ঘোষনা থকলেও তার কোন প্রভাব পড়েনি এসকল দুষ্টচক্রদের উপর। অবাধে চলছে যতসব অবৈধ কর্মকান্ড।
ভুমি অফিস থেকে শুরু করে থানা কোথাও নেই জনসাধারনের আস্থা। নিজ নামীয় রেকর্ড ভুক্ত জমিতে জোর দখল করে আছে অন্যকেউ কিংবা কেটে নিচ্ছে সৃজনকৃত গাছপালা এসব দেখার মতো কেউ নেই। থানায় অভিযোগ করেও টাকার অভাবে হয়না কোনো সমাধান ঝুলে থাকতে হয় বছরের পর বছর।
আদালতে রায় প্রাপ্তের পরেও সীমানা পরিচিহ্ন করে জমি নির্ধারন করে দিতে ব্যার্থ আমিন কানুনগো ও উচ্ছেদ মামলা কার্যকর করতে উপারগ উপজেলা প্রশাসন। হাত দলিলের কাছে জিম্মি রেকর্ডিয় জমির মালিক দুই যুগ অতিবাহিতের পরেও কাগজ কলমে মালিক হলেও দখল পাচ্ছেন না নিজ ভুমির। অবৈধ ভাবে জবর দখলে থাকা ব্যাক্তিদের কাগজ পত্র না থকলেও তা তদন্তের কেউ নেই।
মানিকছড়িতে গত ১৮ মার্চ ২০২১ সকালে এরশাদ মিয়াসহ অজ্ঞাতনামা ৭/৮ জন লোকজন নিয়ে ছিদ্দিক আহাম্মদের ছেলে শাহ আলম ও আবু তালেব গংদের নামীয় জায়গা হইতে একটি চাপালিশ গাছ কেটে ফেলে এবং অপর দুইটি কাটার জন্য প্রস্ততি নিলে তারা দেখতে পেয়ে এরশাদ মিয়াকে তা কাঁটতে বাঁধা দিলে বাধা অমান্য করে। পরে তৎক্ষণিক ৯৯৯-এ কল দিলে মানিকছড়ি থানার কর্তব্যরত পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে গাছ কাটার উপর নিষেধাজ্ঞা দেয়। এ ব্যাপারে মানিকছড়ি থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করা হয়। যা বর্তমান মানিকছড়ি থানার ওসি (তদন্ত) এর দায়িত্বে আছে। এব্যাপারে আজও কোন ব্যাবস্থা গ্রহন করেনি থানা।

শাক দিয়ে মাছ ঢাকার জন্য মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে আলী হোসেন নামক দলালের প্ররচণায় ভুয়া কাগজ পত্র সহ এরশাদ মিয়া মানিকছড়ি উপজেলা কার্যালয়ে নির্বাহী অফিসারকে লিখিত দরখাস্ত দেন। যার পরিপ্রেক্ষিতে, মানিকছড়ি উপজেলা কার্যালয় থেকে ভুমি অফিসের সার্ভেয়ার শাহজাহান সরকারসহ কয়েকজন লোক আদালতের পুর্বের রায় অমান্য করে না জানিয়ে শাহ আলম ও আবু তালেব গংদের জায়গা মাপার জন্য যায়। কিন্তু এই দরখাস্তের সুষ্ঠ তদন্ত করলে বেড়িয়ে আসত তাদের প্রতারনা ও জালিয়াতির সকল তথ্য। তাদের উপস্থাপিত সকল কাগজ পত্র মিথ্যা ও বানোয়াট।
অপরদিকে শাহিন,শাহজাহান,মঙ্গল মিয়া। জয়নাল আবেদিনের দোহায় দিয়ে জায়গায় অবৈধ ভাবে দখলে থেকে শাহ আলমদের সৃজন কৃত গাছপালা কেটে দাঙ্গা সৃষ্টি করছে। অথচ তারা যার দোহায় দিয়ে দখলের চেষ্টা করছে তিনি (জয়নাল আবেদিন) আদালতের নির্দেশে উক্ত জায়গা ছেড়ে দিয়ে অনেক আগেই চলে গেছেন। সে মারা যাবার পরে তার দোহায় দিয়ে শাহিন, শাহজাহান, মঙ্গল মিয়া হাতে লেখা কগজ নিয়ে অন্যের জায়গা দখলের চেষ্টায় আছেন।
অপরদিকে গুইমারা উপজেলার জালিয়াপাড়া গুচ্ছগ্রামে বসবাসরত ফাতেমা বেগম তার বাবার মৃত্যুর সংবাদ শুনলে তার নিজ বাড়িতে ভাড়াটিয়া রেখে তিনি তার বাবার বাড়ি যান কিন্তু পরবর্তিতে তিনি বাসায় ফিরে আসলে উক্ত ভাড়াটিয়া ফাতেমা বেগমের বাসা অবৈধ দখল করে। এই বিষয়ে ফাতেমা বেগম প্রতিবাদ করলে তাকে বেধরক মারধর করে ভাড়াটিয়া ফরিদুল ইসলাম (ফরিদ) এর স্ত্রী হাসিনা বেগন। এই নিয়ে জেলা জজ কোর্ট ও থানায় পাল্টাপাল্টি মামলা দায়ের করেন উভয়েই।
সাম্প্রতি, মাটিরাঙ্গা উপজেলাধীন তাইন্দং-তবলছড়ির শুকনাছড়ি, ইসলামপুর, লাইসাপাড়া এলাকায় নিজেদের ভূমিতে চাষাবাদ করতে গেলে তাতে বাঁধা দেয় উপজাতিরা। এতে বাঙ্গালীদের সাথে পাহাড়িদের বাক-বিতণ্ডার এক পর্যায়ে চড়াও হয় পাহাড়িরা। জায়গা ত্যাগ না করায় বাঙ্গালীদের বেধড়ক মারধর করে পাহাড়িরা। এ সময় বাঙ্গালীদের জিম্মি করে রাখা হয় সেখানে। বাঙ্গালীদের বেদম মারধর করে বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করে।
এইভাবে প্রতিদিন ভুমি জটিলতা নিয়ে ঘটছে নানান ঘটনা। সমাধানের নেই কোন পথ। বছরের পর বছর ধরে ভুক্তভুগি সাধারন জনগন।
এ সকল সমস্যা নিরসনে প্রশাসনকে নিরপেক্ষ থেকে সুষ্ঠ ভুমিকা পালনের মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের দাবী জানান ভুক্তভুগি সাধারন জনগন।

By admin

Related Post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!