নিজস্ব প্রতিবেদক :: মহালছড়ি উপজেলা প্রশাসনের ব্যর্থতার কারণে সকল দুর্নীতি বেড়েই চলেছে। সরকারি কোন নিষেধাজ্ঞার তোয়াক্কা না করেই। এসব দুর্নীতি প্রতিরোধের কোন উদ্যোগ নেওয়ার দৃশ্য চোখে পড়ছেনা। উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রিয়াংকা দত্ত যেকোন অনিয়মের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা না নেওয়ায়, সকল পর্যায়ে দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে।
বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় এই বিষয়ে সংবাদ প্রকাশিত হলেও, প্রশাসনিক পদক্ষেপ না নেওয়ায় দুর্নীতির মাধ্যমে দখলবাজরা উৎসাহিত হয়ে পর্যায়ক্রমে সরকারি খাস জায়গা দখল ও স্থাপনা নির্মাণ কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মনির উদ্দিন আহমেদ–এর ছেলেসহ একটি চক্র সরকারি নিয়ম-নীতি অমান্য করে বহুতলা ভবন নির্মাণের কাজ ও নিচে দোকানপ্লটের কাজ দ্রুতগতিতে চালিয়ে যাচ্ছে। এমনকি দোকানপ্লটের অগ্রীম জামানত হিসাবে টাকা নিয়ে দ্রুত কাজ সমাপ্ত করে তাদেরকে বুঝিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে।
মহালছড়ির বাবু পাড়া সুইচগেট এর সামনে জলেভাসা সরকারী খাস জমির উপর সরকারী নির্দেশ অমান্য করে কয়েকটি চক্র অবৈধ স্থাপনা নির্মানের কাজ শুরু করলে স্থানীয় পি.কে চাকমা নামক এক ব্যক্তি এই অবৈধ স্থাপনা নির্মান বন্ধ করার জন্য একটি লিখিত অভিযোগ করে। তবুও বিভিন্ন স্থানে শত শত একর সরকারী খাস জমি বেদখল হয়ে গেলেও স্থানীয় প্রশাসন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করছে না।
উক্ত অবৈধ স্থাপনা বন্ধ না করায় রাস্তার অপর পার্শে আরেক ব্যক্তি দোকানঘর নির্মানের জন্য মাটি ভরাটের কাজ শুরু করেছে। এ ছাড়াও উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রিয়াংকা দত্ত মহালছড়িতে দ্বায়িত্ব গ্রহন করার পর বিভিন্ন স্থানে প্রায় ৫শ একর জলে ভাসা সরকারী জায়গা বেদখলে চলে যায়। এতে লাভবান হয় অবৈধ স্থাপনা নির্মাণকারী সিন্ডিকেট চক্র ও এক শ্রেনির প্রশাসনিক কর্তা ব্যক্তিরা।
সরেজমিনে তদন্তকালে দেখা যায়, প্রশাসনের কাছে অভিযোগ থাকা সত্তেও স্থানীয় অবসরপ্রাপ্ত ভিডিপি অফিসার মনির উদ্দীন আহমেদ, নাইচাং চাকমা (মাস্টার), খুইজ্জা মগ ফায়ার সার্ভিস এর জন্য নির্ধারিত স্থানে অবৈধভাবে স্থাপনা নির্মাণ, ছড়া ভরাট করে অপর এক ব্যক্তি করাত কল নির্মানসহ বহু অবৈধ স্থাপনা নির্মান করায় ভোগান্তির স্বীকার হচ্ছে এলাকাবাসী। মহালছড়ি উপজেলায় ফায়ার সার্ভিস নির্মানে বাঁধা দেওয়ায় এলাকাবাসী ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন।
মনির উদ্দীন আহমেদের মেয়ে মুন্নি বলেন, ২০১৮ সালে ভবন নির্মানের কাজ শুরু হয়েছে। তৎকালীন জেলা প্রশাসকের নির্দেশে নির্মান কাজ বন্ধ হয়। ২০২০ সালের জুন মাসে স্থানীয় চেয়ারম্যান রতন শীল’কে অবহিত করে আবার নির্মান কাজ শুরু করা হয়।
মহালছড়ি থানার অফিসার ইনচার্জ জাহাঙ্গীর আলম জানান, প্রশাসনিক ভাবে নির্মাণ কাজ বন্ধ করার বিষয়ে কোন লিখিত অভিযোগ না পাওয়ায় ব্যবস্থা নিতে পারছিনা।
স্থানীয় বীর মুক্তিযোদ্ধা একেএম হুমায়ুন কবির বলেন, জলেভাসা জায়গা সরকারের সম্পত্তি। স্থায়ী স্থাপনা নির্মান করার কোন নিয়ম নেই। নিয়ম ভঙ্গ করে একসনা বন্দোবস্তির নামে এক তলা থেকে পাঁচ তলা ভবন নির্মান করে গেলেও প্রশাসন কোন প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহন করছে না।
বিভিন্ন অনিয়ম, দুর্নীতি ও সরকারি জায়গা দখল করে মনির উদ্দীন আহমেদের অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ সংক্রান্ত বিষয়ে মহালছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রিয়াংকা দত্তের সাথে টেলিফোনে যোগাযোগ করে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তদন্তের জন্য স্থানীয় চেয়ারম্যান’কে একটি চিঠি পাঠানো হয়েছে। তার প্রতিবেদন দিয়েছে কি না তার সদুত্তর না দিয়ে বিষয়গুলো তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান। তবে তা স্পষ্ট না করেই টেলিফোন রেখে দেন।