শিরোনাম
মঙ্গল. ডিসে ২৪, ২০২৪

মহালছড়ি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নানা অব্যবস্থাপনা বিরাজ করছে – প্রতিবেদন ৩

যত্রতত্র ফেলে রাখা সরকারি ঔষধের কার্টুন। কিন্তু সাধারণ জনগণ ঠিকভাবে ঔষধ পায় না।

বিশেষ প্রতিবেদন :: খাগড়াছড়ি জেলার মহালছড়ি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নানা অব্যবস্থাপনা বিরাজ করছে। এই মহালছড়ি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দীর্ঘদিন যাবৎ বিভিন্ন অনিয়মের মাধ্যমে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অবৈধভাবে বাসা-বাড়ি নির্মাণ করে ভাড়া দেওয়া, বদলী হলে অন্যের কাছে নির্মিত বাসা মোটা অংকের টাকা নিয়ে বিক্রি করে বলে স্থানীয় এলাকাবাসী ও হাসপাতালের কর্মচারী সূত্রে জানা গেছে।

জরাজীর্ণ সরকারি স্টাফ কোয়ার্টার ও ‍অকেজো হয়ে পড়ে থাকা হাসপাতালের সরকারি এ্যাম্বুলেন্স

এ ধরনের অভিযোগের প্রেক্ষিতে সরেজমিন তথ্যানুসন্ধানে গিয়েছি। ইতিপূর্বে তিনটি সরকারি স্টাফ কোয়ার্টার মেরামতের নামে মোটা অংকের অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে। বর্তমানে কোয়ার্টারগুলো ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে পড়ায়, পুন: নির্মাণের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানিয়েছে বলে হাসপাতালে কর্মচারীরা জানান। এছাড়াও ছোট ছোট ২০-২৫ টি টিন শেড ও আধা পাকা ঘর রয়েছে। কর্মচারীরা নিজেরাই নিজেদের অর্থ দিয়ে ঘর নির্মাণ করেছে বলে দাবী করেন। কারো নিকট কোন লিখিত অনুমতি নেই। এছাড়াও রোগী আনা-নেওয়ার জন্য বরাদ্দকৃত সরকারি এ্যাম্বুলেন্সটি অকেজো হয়ে পড়ে আছে এবং রোগীদের পরীক্ষা-নিরীক্ষার সকল যন্ত্রপাতি নষ্ট হয়ে পড়ে আছে বলে জানা যায়। এমনকি কোয়ার্টারের বিভিন্ন আসবাবপত্র অল্প কিছু থাকলেও বেশিরভাগ’গুলো কে বা কারা নিয়ে গেছে, তার কোন হদিস নাই।

হাসপাতালের জমির প্রায় ১০/১১ একর ভূমির কোন সীমানা প্রাচীর নাই। জায়গায় থাকা বিভিন্ন গাছের ফলমূল যে যার মতো করে নিয়ে যাচ্ছে, দেখার কেউ নাই। এছাড়া কর্মরত নৈশ প্রহরী, আয়া, ওয়ার্ড বয়, বাগান মালিরা বেশিরভাগ ফলমূল নিজেরা নিজেদের মতো করে নিয়ে যায় এবং বাজারে বিক্রি করে বলে জানা গেছে।

বিভিন্ন কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য নির্মিত বিল্ডিংগুলো সংস্কার না করায়, ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। এমন পরিবেশে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ভবনগুলো সংস্কার না করলে, যে কোন মূহুর্তে দূর্ঘটনা ঘটতে পারে।

চাকরীরত কিছু কর্মচারী এলপিআর-এ গেলেও বাসা-বাড়ি ছেড়ে না দিয়ে, অবৈধভাবে বসবাস করে যাচ্ছে।

সরকার কর্তৃক সরবরাহকৃত ঔষধ-পত্র এলোমেলো অবস্থায় স্টোর রুমে অগোছালো অবস্থায় এবং বাইরে বারান্দায় রেখে সরকারের নিয়ম-নীতি ভঙ্গ করেছে। এ সকল ঔষধ সাধারণ জনগণকে না দিয়ে বাহিরে বিক্রি করা হচ্ছে বলে হাসপাতালে আসা রোগীরা অভিযোগ করছে। মহালছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের রোগীরা ডাক্তার দেখিয়ে ঔষধের স্লিপ নিয়ে হাসপাতালের ফার্মেসী’তে ঔষধ নিতে গেলে ঔষধ থাকা সত্বেও রোগীদেরকে ঔষধ নেই বলে বাইরে থেকে ঔষধ ক্রয় করতে বলে।

মহালছড়ি উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি রতন শীল জানান, মহালছড়ি হাসপাতালের চিকিৎসা সেবা, ঔষধ বিতরণে অনিয়ম, কর্মচারীদের দায়িত্ব অবহেলা’সহ করোনাকালীন সময়ে জনগণের স্বাস্থ্য সেবা পাওয়ার কথা থাকলেও তা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এ ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ সুষ্ঠু তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।

By admin

Related Post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!