নিজস্ব প্রতিবেদক :: পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয় সূত্রে তিন পার্বত্য জেলা পরিষদ পুনর্গঠনের ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। এর ফলে পদ প্রত্যাশী নেতাকর্মীদের মধ্যেও দৌড়-ঝাপ শুরু হয়েছে। অপর দিকে নির্বাচন ছাড়া দলীয় মনোনীত ব্যক্তিদের দ্বারা পরিচালিত হওয়ায় সাধারণ মানুষের আস্থা হারিয়েছে তিন পার্বত্য জেলা পরিষদ। পার্বত্য জেলা পরিষদগুলো যেকোন সময় পুনর্গঠন ও সদস্য পরিবর্তনের গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে।
১৯৮৯ সালের ২৫ জুন নির্বাচনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল খাগড়াছড়ি, রাঙ্গামাটি ও বান্দরবান তিন পার্বত্য জেলায় স্থানীয় সরকার পরিষদ। একজন চেয়ারম্যান (উপজাতি) ও ৩০ জন সদস্য নিয়ে এই পরিষদের যাত্রা। পাঁচ বছর পর পর নির্বাচনের মাধ্যমে পরিষদটি গঠন হওয়ার কথা ছিল। সময়ের ব্যবধানে স্থানীয় সরকার পরিষদ ‘পার্বত্য জেলা পরিষদ’-এ রূপ লাভ করেছে।
১৯৯৭ সালে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির বদৌলতে স্থানীয় সরকার পরিষদের নাম বদল করে রাখা হয় ‘পার্বত্য জেলা পরিষদ’। সে সাথে ৩১ সদস্যের পরিষদ ভেঙ্গে ফ্যাক্স বার্তার মাধ্যমে একজন চেয়ারম্যান (উপজাতি) ও অপর চার সদস্য দিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন পরিষদ গঠিত হয়। সে থেকে নির্বাচন বিহীন ও ফ্যাক্স বার্তায় জেলা পরিষদে চেয়ারম্যান ও সদস্য পরিবর্তন হওয়ায় সরকার দলীয় নেতাকর্মীদের পুনর্বাসন কেন্দ্রে পরিণত হয়ে আসছে তিন পার্বত্য জেলা পরিষদ।
বর্তমান সরকার দ্বিতীয় মেয়াদে দায়িত্ব গ্রহণের পর সর্বশেষ ২০১৪ সালের ২৩ নভেম্বর মহান জাতীয় সংসদে পাস হওয়া সংশোধনীতে ৫ সদস্যের অন্তর্বর্তীকালীন পরিষদকে ১ জন চেয়ারম্যান ছাড়াও ১৪ জন সদস্য নিয়ে জেলা পরিষদ গঠনের সিদ্ধান্ত হয়। সে আলোকে ২০১৫ সালের ২৫ মার্চ খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের কংজরী চৌধুরী, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের ক্য শৈ হ্লা ও রাঙ্গামাটি জেলা পরিষদে বৃষ কেতু চাকমাকে চেয়ারম্যান করে ও প্রত্যেক পরিষদে মোট ১৫ সদস্যের তিন পার্বত্য জেলা পরিষদ পুনর্গঠন করা হয়।
অপরদিকে পরিষদগুলোর কতিপয় সদস্যদের বিরুদ্ধে নিয়োগ বাণিজ্যসহ নানা অভিযোগ রয়েছে। কিন্তু চেয়ারম্যানরা রয়েছে সরকারের গুডবুকে। ফলে সদস্যদের ক্ষেত্রে যোগ-বিয়োগ হলেও বর্তমান চেয়ারম্যানরাই থাকছেন এমন ইঙ্গিত পাওয়া গেছে।
এদিকে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং সম্প্রতি একটি সূত্রে তিন পার্বত্য জেলা পরিষদ পুনর্গঠনের ইঙ্গিত দিয়েছেন। তবে বর্তমানে যেটি চলমান আছে সেটি আমরা ধরে নিই ৫ বছর মেয়াদি। ইতোমধ্যে বর্তমান পরিষদগুলোর ৫ বছর মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। সেক্ষেত্রে যেকোনো মুহূর্তে পুনর্গঠন হবে।
এ বিষয়ে খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কংজরী চৌধুরী বলেন, দায়িত্ব পাওয়ার পর সরকারের ভিশন বাস্তবায়নে নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করেছি।
এদিকে জেলা পরিষদ পুনর্গঠন হচ্ছে এমন খবরে খাগড়াছড়ি, রাঙ্গামাটি এবং বান্দরবানে সরকার দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে পদ প্রত্যাশীদের দৌড়-ঝাপ শুরু হয়ে গেছে। সম্ভাব্য প্রার্থীরা নিজেদের পদ নিশ্চিত করার জন্য জেলা এবং জেলার বাইরে দলের উচ্চস্তরে যোগাযোগ শুরু করেছেন।