নুরুল আলম
প্রাকৃতিক সৌন্দর্য সবুজ পাহাড়ে ঘেরা পার্বত্য চট্টগ্রামের খাগড়াছড়ি, বান্দরবান, রাঙ্গামাটি শহর, ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম হয়ে সড়কপথে রাঙ্গামাটি যাতায়াত করতে প্রায় ৮ থেকে ১০ ঘন্টা সময় লাগে। যানজটসহ বিভিন্ন কারণে কখনো কখনো আরও বেশি সময় লেগে যায়।
এর বড় একটি কারণ ঢাকা-রাঙ্গামাটির মধ্যে সরাসরি সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা না থাকা। যার কারণে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম হয়ে অতিরিক্ত ৭০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে রাঙ্গামাটি যেতে অতিরিক্ত সময় অর্থব্যায়সহ অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতির কারণে চরম ভোগান্তি পোহাতে হয় যাত্রীদের।
অপরদিকে স্থানীয়রাও তাদের উৎপাদিত কৃষি পন্য বাজারজাতসহ নানা প্রয়োজনে যাতায়াত ক্ষেত্রে চরম ভোগান্তিতে ছিলেন। দীর্ঘদিন ধরে এই ভোগান্তির অবসান চেয়ে আসছিলেন পার্বত্য জনপদের মানুষ এবং রাঙ্গামাটিসহ পার্বত্যাঞ্চলে ভ্রমণে ইচ্ছুক পর্যটকরা। তাদের এই প্রত্যাশা পূরণ করতে রাজধানী ঢাকার সঙ্গে সড়কপথে রাঙ্গামাটির যোগাযোগ আরও দ্রুত সহজ করার উদ্যোগ নেয় সরকার। অগ্রাধিকারভিত্তিক উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায়, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ারিং কন্সট্রাকশন ব্যাটালিয়ন (প্রথমে ১৯ইসিবি) পরবর্তিতে (২০ইসিবি) তত্ত্বাবধানে খাগড়াছড়ির-মহালছড়ি-সিন্ধুকছড়ি-জালিয়াপাড়া সড়কের প্রায় ২২ কিলোমিটার মহাসড়ক নির্মাণের কাজ শুরু করা হয়। জালিয়াপাড়া থেকে সিন্দুকছড়ি পর্যন্ত ৭ কিলোমিটার সড়কের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। বাকী সাড়ে ১৫ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণ কাজ বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ারিং কন্সট্রাকশন ব্যাটালিয়ন ২০ইসিবির তত্ত্বাবধানে ৫টি নির্মাণ প্রতিষ্ঠান দ্রুত গতিতে নির্মাণ করে যাচ্ছিলো।
সড়কটি নির্মাণ কাজ সম্পূর্ণ হলে ঢাকা থেকে বারাইয়ারহাট-খাগড়াছড়ির জালিয়াপাড়া হয়ে সরাসরি রাঙ্গামাটি যাতায়াত করতে সময় ও অর্থের সাশ্রয় হবে।
খাগড়াছড়ি জেলার সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী সবুজ চাকমা জানান, বর্তমান আওয়ামীলীগ সরকার পার্বত্য জেলাগুলোর উন্নয়নে বৈপ্লবিক পরিবর্তন করছে, যা দৃশ্যমান হচ্ছে। মহালছড়ি-সিন্দুকছড়ি-জালিয়াপাড়া সড়কটি নির্মান সম্পূর্ণ হলে একদিকে যেমন ঢাকা থেকে রাঙ্গামাটি যাতায়াত করতে সময় ও অর্থ সাশ্রয় হবে, অন্যদিকে খাগড়াছড়ি-চট্টগ্রাম সড়কের ফটিকছড়ি সিমান্ত থেকে খাগড়াছড়ি, মহালছড়ি, পানছড়ি, দিঘীনালা থেকে মারিশ্যা, বাঘাইছড়ির বাঘাইহাট পর্যন্ত মহসড়কগুলো প্রশস্তকরণ ও ড্রেন, কালভার্ট ও ঢালাইয়ের কাজ চলছে। এতে করে যানবাহন চলাচল ও যোগাযোগ ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন সাধিত হবে। জনগণের জীবনমান উন্নত হবে এবং পর্যটন শিল্প আরও বিকশিত হবে। পার্বত্য চট্টগ্রামে পর্যটক আকর্ষণে সফলতা পাবে। বদলে যাবে খাগড়াছড়িসহ পার্বত্য চট্টগ্রামের দৃশ্যপট। উপকৃত হবে পর্যটকদের সাথে স্থানীয় বাসিন্দারাও।