শিরোনাম
মঙ্গল. ডিসে ২৪, ২০২৪

পার্বত্য জেলা পরিষদগুলোতে প্রায় ৩২ বছর নির্বাচন হচ্ছে না

আল মামুন, খাগড়াছড়ি :: তিন পার্বত্য জেলা পরিষদের নির্বাচন থমকে আছে আজ প্রায় ৩২ বছর ধরে। সব সরকারের আমলেই দলীয় সরকারের মনোনীত পছন্দের চেয়ারম্যান দিয়ে চলছে তিন পার্বত্য জেলার জেলা পরিষদের উন্নয়ন কর্মকান্ড। যার কারণে পার্বত্যাঞ্চলের উন্নয়ন ও অগ্রগতির জন্য সরকারের ব্যাপক অর্থ বরাদ্ধ আসলেও বিভিন্ন কারণে উন্নয়ন ও অগ্রগতি দৃশ্যমান হচ্ছে না।

১৯৮৯ সালে প্রথমবারের মতো তিন পার্বত্য জেলায় জনগণের অংশ গ্রহনে সরাসরি ভোটে নির্বাচনের মাধ্যমে পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান’সহ সদস্যরা নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে আজ পর্যন্ত কোন সরকারই পার্বত্য জেলা পরিষদের নির্বাচনের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে পারেনি। তবে এ নির্বাচনের মেয়াদ ছিলো পাঁচ বছর। বছরের পর বছর নির্বাচন না হওয়ার পেছনে প্রধান কারন হিসেবে বিশ্লেষকরা বলছেন, পার্বত্য শান্তিচুক্তি পুরোপুরি বাস্তবায়ন না হওয়াতে জেলা পরিষদের নির্বাচনে বাঁধা দিচ্ছেন পার্বত্যাঞ্চলের আঞ্চলিক রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দরা।

এদিকে পার্বত্য জেলার সুশীল সমাজের দাবি হচ্ছে পার্বত্য জেলার আঞ্চলিক রাজনৈতিক দলগুলো যদি বর্তমান ভোটার তালিকায় ও জাতীয় পরিচয়পত্রের মাধ্যমে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে সংসদ নির্বাচন করতে পারে, তাহলে একই ভাবে পার্বত্য জেলা পরিষদের নির্বাচন করতে বাঁধা কোথায়?

পার্বত্য জেলা পরিষদের নির্বাচন করতে হলে, পার্বত্য জেলা পরিষদ আইনে স্পষ্ট ভাবে উল্লেখ করা হয়েছে যে, একজন চেয়ারম্যান, একুশ জন উপজাতীয় সদস্য ও নয় জন অ-উপজাতীয় সদস্য পার্বত্যাঞ্চলের জনগণের সরাসরি ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত হতে হবে।

যখন যে সরকার ক্ষমতায় আসছে সেই সরকারের ইচ্ছা ও খেয়াল খুশিতেই নির্ধারণ করা হচ্ছে জনপ্রতিনিধিত্বশীল পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্যদের। যার কারনে তিন পার্বত্য জেলার জনগনের ভোটাধিকার’সহ তাদের ন্যায্য অধিকার ও সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন অনায়াসেই।

বর্তমান যে-ই চেয়ারম্যান হোকনা কেন, পার্বত্য অঞ্চলে গরীব অসহায় দরিদ্রের মধ্যে আর্থিক সহায়তা প্রদানের ক্ষেত্রে এই পরিষদ পাশে থাকেন।

খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে কংজরী চৌধুরী অন্তর্বর্তিকালীন নিয়োগ হওয়ার পর থেকে হাজার হাজার মানুষের স্বপ্ন বাস্তবায়নে পাহাড়ে বাসবাসকারীদের মাঝে সম্প্রীতি বন্ধন সৃষ্টিসহ উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রেখেছেন। অতীতের সকল পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যানদের চেয়েও বেশি উন্নয়নমূলক কাজ করে জনগণের আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছেন তিনি।

অপরদিকে খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার ব্যবসায়ী এবং বুদ্ধিজীবি সকলের দাবী, তিন পার্বত্য জেলা পরিষদে সরাসরি নির্বাচনের মাধ্যমে প্রতিনিধি নির্বাচিত করে সু-শাসন প্রতিষ্ঠার। পূর্বে যারা চেয়ারম্যান হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন, তারা হচ্ছে বাবু সমিরণ দেওয়ান, নক্ষত্র লাল দেব ব্রহ্মন, যতীন্দ্র লাল ত্রিপুরা, রুইতি কার্বারী, কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা, বর্তমানে কংজরী চৌধুরী দায়িত্ব পালন করছেন। পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য রয়েছেন ১৪ জন। অচিরেই এই তিন পার্বত্য জেলা পরিষদের নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশন-এর প্রতি দাবী জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

By admin

Related Post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!