নিজস্ব প্রতিবেদক:: মহালছড়ি উপজেলায় বাবু পাড়া সুইচগেট এর সামনে জলেভাসা সরকারী খাস জমির উপর সরকারী নির্দেশ অমান্য করে মনির উদ্দীন আহমেদ নামক অবসরপ্রাপ্ত ভিডিপি অফিসার পেনশনের টাকা দিয়ে একটি বহুতলা ভবন নির্মানের কাজ শুরু করলে পি.কে চাকমা নামক এক ব্যক্তি এই অবৈধ স্থাপনা নির্মান বন্ধ করার জন্য একটি লিখিত অভিযোগ করে। বিভিন্ন স্থানে শত শত সরকারী খাস জমি বেদখল হয়ে গেলেও স্থানীয় প্রশাসন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছে না।
যানাযায়, গত ১৫জুলাই’২০২০ খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক বরাবরে একটি লিখিত অভিযোগ করে পি.কে চাকমা নামক এক ব্যক্তি। ২৭ জুলাই জেলা প্রশাসকের নিদের্শে রেভিনিউ ডেপুটি কালেক্টর তৃলা দেব অভিযোগ গ্রহণ করে ঐদিনেই মহালছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রিয়াংকা দত্ত’র নিকট অভিযোগটি প্রেরণ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা নিদের্শ দেয়। কিন্তু উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও দ্বায়িত্বপ্রাপ্ত সহকারী ভূমি কমিশনার দ্বায়িত্বে থাকার পরেও বিষয়টি সরাসরি নির্মান কাজ বন্ধ না করে স্থানীয় ১নং মহালছড়ি ইউপি চেয়ারম্যানকে জলেভাসা সরকারী খাস জমির উপর সরকারী নির্দেশ অমান্য করে মনির উদ্দীন আহমেদ এর অবৈধ ভাবে নির্মিত বহুতলা স্থাপনা নির্মান কাজ বন্ধ করার ব্যপারে কোন কার্যকরী পদক্ষেপ নেননি বলে অভিযোগ উঠেছে। উক্ত অবৈধ স্থাপনা বন্ধ না করায় রাস্তার অপর প¦ার্শে আরেক ব্যক্তি দোকানঘর নির্মানের জন্য মাটি ভরাটের কাজ শুরু করেছে। এ ছাড়াও উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রিয়াংকা দত্ত মহালছড়িতে দ্বায়িত্ব গ্রহনকরার পর প্রায় বিভিন্ন স্থানে ৫শ একর জলে ভাসা সরকারী জায়গা বেদখলে চলে যায়। এতে লাভবান হয় অবৈধ স্থাপনা নির্মাণকারী সিন্ডিগেট চক্র ও এক শ্রেনির প্রশাসনিক কর্তা ব্যক্তিরা।
সরেজমিনে তদন্তকালে দেখাযায়, প্রশাসনের কাছে অভিযোগ থাকা সত্তেও স্থানীয় অবসরপ্রাপ্ত ভিডিপি অফিসার মনির উদ্দীন আহমেদ, নাইচাং চাকমা (মাস্টার), খুইজ্জা মগ, ফায়ার সার্ভিস এর জন্য নির্ধারিত স্থানে অবৈধভাবে ব্রিকফিল্ড (বিসমিল্লাহ ব্রিকফিল্ড) নির্মানকারী আকতারুল আলম, ছড়া ভরাট করে অপর এক ব্যক্তি করাত কল নির্মান সহ বহু অবৈধ স্থাপনা নির্মান করায় ভোগান্তির স্বীকার হচ্ছে এলাকাবাসী। মহালছড়ি উপজেলায় ফায়ারসার্ভিস নির্মানে বাধা দেওয়ায় এলাকাবাসী ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন।
মনির উদ্দীন আহমেদের মেয়ে মন্নি বলেন, ২০১৮ সালে ভবন নির্মানের কাজ শুরু হয়েছে। তৎকালীন জেলা প্রশাসকের নির্দেশে নির্মান কাজ বন্ধ হয়। ২০২০ সালে জুন মাসে স্থানীয় চেয়ারম্যান রতন শীলকে অবহিত করে আবার নির্মান কাজ শুরু করা হয়। প্রশাসনিক ভাবে কোন লিখিত নিষেধাজ্ঞার চিঠি পাইনি।
স্থানীয় বীর মুক্তিযোদ্ধা একেএম হুমায়ুন কবির বলেন, জলেভাসা জায়গা সরকারের সম্পত্তি। স্থায়ী স্থাপনা নির্মান করার কোন নিয়ম নেই। নিয়ম ভঙ্গকরে একসনা বন্দোবস্থির নামে এক তলা থেকে পাচ তলা ভবন নির্মান করে গেলেও প্রশাসন কোন প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহন করছে না।
মহালছড়ি সদর ইউপি চেয়ারম্যান রতন শীল বলেন, অবৈধ স্থাপনা নির্মানের ব্যপারে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ইউএনও অফিস থেকে একটি চিঠি পেয়েছি। এর আলোকে তদন্ত করে প্রতিবেদন প্রেরণ করবেন বলে জানান।
মহালছড়ি ইউএনও প্রিয়াংকা দত্ত জানান, জেলা প্রশাসকের নিকট থেকে মহালছড়ি সুইচগেট এর সামনে জলেভাসা খাস জমির উপর সরকারী নির্দেশ অমান্য করে মনির উদ্দীন আহমেদ নামক এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে পি.কে চাকমার করা অভিযোগের আলোকে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য গত ২৭ জুলাই নির্দেশনা পেয়েছি। এ ব্যপারে আইগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।